নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে

বল্লরী চেম্বারে ঢোকার সময়ই নেমপ্লেটে দেখে ক্রেয়নের নামের সাথে লেখা ‘Social Media Consultant‘। চেয়ারে বসেই হাহাকার করে ওঠে বল্লরী, -আমি আমার চিত্রকে হারিয়ে ফেলেছি রে…. ক্রেয়ন চমকে উঠে বলে -সেকি!! -সেকি মানে? এমনভাবে চমকাচ্ছিস যেন তুই 2071-এ নয়, 2021-এ বসে আছিস। -কিন্তু চিত্রকদা মানে তোর হাজব্যান্ড….. -হ্যাঁ। আজ এক সপ্তাহ ধরে ওকে আমি দেখতে পাচ্ছি না। ঘরে, বাইরে, বিছানায়, চেয়ারে কোত্থাও না। ও ঠিকঠাক অফিস করছে। ঘরে সবাই ওকে দেখতে পাচ্ছে। শুধু আমি…… -চিত্রকদার কথা শুনতে পাচ্ছিস? – সেও কেমন –‘ ব্লার….. ব্লার……’ মত। বোঝা যাচ্ছে না। -দেখি চিত্রকদার ই. মেলটা দে। কিছুক্ষণ দেখে ক্রেয়ন বলে, -হুম, বুঝেছি। চিত্রকদার একাউন্ট থেকে তোকে কেউ ভিশন ব্লক করে দিয়েছে। ঘরে কে কে আছে? -ঘরে তো in-law বাবা-মা, দাদাভাই-দিদিভাই পুচকু। -আরে দিদিভাই মানে তো সঞ্চারীদি। সেই যার চিত্রকদাকে খুব পছন্দ ছিল….। -যা:, কি যে বলিস। দিদি আমাকে ভালোবাসে খুব। নামেও মিল। ও তো এখন ‘Fast Pay’-র “Head of Cyber Security” এই ব্লকিংটা নিয়েও অনেক চেষ্টা করেছে। -কিন্তু কিছু করতে পারল না। পারবেও না। ওদেরই ব্যাচের সায়নদা বলেছে আমাকে। হাত ধুয়ে পড়েছিল চিত্রকদার পিছনে। চিত্রকদা পাত্তা না দেওয়াতে ওর দাদা সার্থকদার কাছে পৌঁছে গেল। -কিন্তু চিত্রক তো বৌদি বলে খুবই সম্মান করে। কখনো এসব কথা তো বলে নি আমাকে। -কি আর বলবে….. খাপছাড়া ভাবে কথা বলতে বলতে ল্যাপটপে ডুবে যায় ক্রেয়ন। অনেক অনেকক্ষণ পরে বলে, -বাড়ি গিয়ে বরের সঙ্গে বসে চা খা। বিপদ কেটে গেছে। ঘন্টা দুয়েক পরে ক্রেয়নের ফোনে বল্লরী পাঁচ মিনিট কাঁদার পর চিত্রকের আবেগ মেশানো গলা, -এও কি সম্ভব? জানি ভিশন ব্লকিং আজ সারা পৃথিবীতে মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করে তুলেছে। কিন্তু তুমি যেভাবে…. ক্রেয়ন শুধু বলে, -আমি তোমার একাউন্ট হ্যাক করে বল্লরীকে ভিশন আনব্লক করে দিয়েছি। হ্ঠাৎ বল্লরী ফোনটা নিয়ে জিজ্ঞেস করে, -কে করেছিল বলত ব্লক? কিছুটা দ্বিধার সাথেই ক্রেয়ন উত্তর দেয়, –মানে, বার বার ট্রেস করার পরও চিত্রকদারই I. P. Address টা দেখাচ্ছে।